Banglastan (বাংলাস্তান) কেমন হবে?
বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, আরাকান (মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ), বিহার এবং উড়িষ্যা একত্রিত হয়ে একটি রাষ্ট্র গঠন করলে সেই রাষ্ট্রটি বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় হবে।
কেমন হবে যদি বাংলাদেশ, পশ্চিম বঙ্গ, আসাম, মেঘালয়া, ত্রিপুরা, আরাকান, বিহার, উড়িষ্যা এসমস্ত অঞ্চল একত্রিত হয়ে একটি স্টেট এ রুপান্তরিত হয়। তাহলে এই স্টেটের আয়তন, জনসংখ্যা, মাথাপিছু আয়, রিজার্ভ অর্থ, সামরিক শক্তিমত্তা, প্রশাসনিক অবকাঠামো, পর্যটন কেন্দ্র, রাজধানী, অর্থনৈতিক অঞ্চল, ক্রিড়া, সাংস্কৃতিক চর্চা, ধর্মীয় চর্চা এগুলো কেমন হতে পারে। চল বিশ্লেষণ করি:
১. আয়তন ও প্রাকৃতিক সম্পদ
এই রাষ্ট্রটির মোট আয়তন হবে:
- বাংলাদেশ: ১৪৭,৫৭০ বর্গকিমি
- পশ্চিমবঙ্গ: ৮৮,৭৫২ বর্গকিমি
- আসাম: ৭৮,৪৩৮ বর্গকিমি
- মেঘালয়: ২২,৪২৯ বর্গকিমি
- ত্রিপুরা: ১০,৪৯১ বর্গকিমি
- আরাকান: ৩৬,৭৮০ বর্গকিমি
- বিহার: ৯৪,১৬৩ বর্গকিমি
- উড়িষ্যা: ১৫৫,৭০৭ বর্গকিমি
মোট আয়তন: ৬৩৪,৩৩০ বর্গকিমি
এই রাষ্ট্রটির বিশাল আয়তন এবং ভিন্ন ভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদ থাকবে:
- বনজ সম্পদ: সুন্দরবন, কজিরাঙা, মেঘালয়ের ঘন বন, ত্রিপুরার বনে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী।
- খনিজ সম্পদ: উড়িষ্যা এবং বিহারে লোহা, কয়লা, বক্সাইট এবং অন্যান্য খনিজ।
- জলসম্পদ: গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা এবং অন্যান্য বড় নদী।
২. জনসংখ্যার বৈচিত্র্য
এই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা হবে:
- বাংলাদেশ: প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন
- পশ্চিমবঙ্গ: প্রায় ১০০ মিলিয়ন
- আসাম: প্রায় ৩৬ মিলিয়ন
- মেঘালয়: প্রায় ৩.৩ মিলিয়ন
- ত্রিপুরা: প্রায় ৪ মিলিয়ন
- আরাকান: প্রায় ৩.২ মিলিয়ন
- বিহার: প্রায় ১২৭ মিলিয়ন
- উড়িষ্যা: প্রায় ৪৬ মিলিয়ন
মোট জনসংখ্যা: প্রায় ৪৮৪.৫ মিলিয়ন
জনসংখ্যার বৈচিত্র্য ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, এবং সামাজিক গঠনকে বিভিন্ন দিকে প্রভাবিত করবে:
- ভাষা: বাংলা, হিন্দি, আসামি, ওড়িয়া, মণিপুরি, রাখাইন, ইংরেজি ইত্যাদি।
- ধর্ম: হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সহাবস্থান।
৩. মাথাপিছু আয়
- মাথাপিছু আয় গড়ে প্রায় $২,০০০ হতে পারে, তবে এটি অঞ্চলভেদে ভিন্ন হতে পারে।
৪. রিজার্ভ অর্থ ও অর্থনীতি
- এই অঞ্চলের রিজার্ভ অর্থ প্রধানত বাংলাদেশ এবং ভারতের রিজার্ভের সংমিশ্রণে গঠিত হবে।
একত্রিত রাষ্ট্রের অর্থনীতি একটি শক্তিশালী ও মিশ্র অর্থনীতি হবে:
- কৃষি: চাল, গম, তেলবীজ, চা, পাট এবং অন্যান্য ফসলের উত্পাদন।
- শিল্প: গার্মেন্টস, চামড়া, ইস্পাত, জাহাজ নির্মাণ, আইটি।
- সেবা খাত: ব্যাংকিং, টেলিকমিউনিকেশন, পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা।
৫. সামরিক শক্তিমত্তা
- সামরিক শক্তি বেশ শক্তিশালী হবে, কারণ বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনীর মিলিত ক্ষমতা এই অঞ্চলে প্রভাবশালী হবে।
এই অঞ্চলের সামরিক শক্তিমত্তা বিশাল এবং সক্ষম হবে:
- বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনী মিলে এই অঞ্চলে শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতি তৈরি করবে।
- বিমান বাহিনী, নৌ বাহিনী এবং স্থল বাহিনীর সমন্বয় থাকবে।
৬. প্রশাসনিক অবকাঠামো
- প্রশাসনিক কাঠামো জটিল হতে পারে কারণ বিভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি এবং আইন রয়েছে। একটি যুক্তরাষ্ট্রের মতো ফেডারেল সিস্টেম থাকতে পারে।
প্রশাসনিক অবকাঠামো একটি ফেডারেল সিস্টেমে বিভক্ত হবে, যেখানে প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব ক্ষমতা থাকবে:
- কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব সরকার থাকবে।
- স্থানীয় প্রশাসন ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।
৭. পর্যটন কেন্দ্র
- এই অঞ্চলে সুন্দরবন, তাজমহল, পুরী, সিলেট, চেরাপুঞ্জি, কক্সবাজার, ত্রিপুরার মন্দির, উড়িষ্যার বিভিন্ন মন্দির, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং এবং অন্যান্য অনেক পর্যটন কেন্দ্র থাকবে।
প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্রগুলি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকর্ষণ করবে:
- কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত, দার্জিলিংয়ের পাহাড়, পুরীর জগন্নাথ মন্দির, মেঘালয়ের জলপ্রপাত।
- ঐতিহাসিক স্থাপত্য যেমন তাজমহল, হুমায়ূনস মাজার, মহাবলিপুরম ইত্যাদি।
৮. রাজধানী
- রাজধানী নির্বাচনের জন্য ঢাকা, কলকাতা, পাটনা বা ভুবনেশ্বরের মধ্যে যে কোন একটি হতে পারে।
৯. অর্থনৈতিক অঞ্চল
- চট্টগ্রাম, কলকাতা, গুয়াহাটি, পাটনা, ভুবনেশ্বর এবং আরও অনেক বাণিজ্যিক কেন্দ্র থাকবে।
একত্রিত রাষ্ট্রের অর্থনীতি একটি শক্তিশালী ও মিশ্র অর্থনীতি হবে:
- কৃষি: চাল, গম, তেলবীজ, চা, পাট এবং অন্যান্য ফসলের উত্পাদন।
- শিল্প: গার্মেন্টস, চামড়া, ইস্পাত, জাহাজ নির্মাণ, আইটি।
- সেবা খাত: ব্যাংকিং, টেলিকমিউনিকেশন, পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা।
১০. ক্রিড়া
- ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, এবং অন্যান্য অনেক ক্রীড়া জনপ্রিয় হবে। ঢাকায়, কলকাতায় এবং পাটনায় বৃহৎ স্টেডিয়াম থাকবে।
খেলাধুলায় এই রাষ্ট্রটি একটি প্রধান কেন্দ্র হবে:
- ক্রিকেট: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের জন্য বড় বড় স্টেডিয়াম।
- ফুটবল: কলকাতা, ঢাকা, পাটনা ও অন্যান্য শহরগুলোতে ফুটবল ক্লাব ও স্টেডিয়াম।
- অন্যান্য খেলা: হকি, ব্যাডমিন্টন, কাবাডি, টেনিস।
১১. সাংস্কৃতিক চর্চা
- বাউল গান, রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, মিথিলা শিল্প, বিহারের লোক সংস্কৃতি, উড়িষ্যার নৃত্যশৈলী ইত্যাদি সাংস্কৃতিক চর্চা জনপ্রিয় থাকবে।
সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ হবে:
- সাহিত্য: বাংলা ও হিন্দি সাহিত্য, মণিপুরি লোককাহিনী, ওড়িয়া কবিতা।
- শিল্পকলা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্ম, সিতার ও সানাই, ভারতনাট্যম, উড়িষ্যার ওডিসি নৃত্য।
১২. ধর্মীয় চর্চা
- হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মের মেলবন্ধন থাকবে।
ধর্মীয় সহাবস্থান ও সম্প্রীতির পরিবেশ থাকবে:
- মসজিদ, মন্দির, গীর্জা এবং প্যাগোডার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।
- ধর্মীয় উৎসব: ঈদ, দুর্গাপূজা, দীপাবলি, বুদ্ধ পূর্ণিমা ইত্যাদি।
১৩. শিক্ষা ও গবেষণা
শিক্ষা ও গবেষণায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে:
- বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, IIT পাটনা, উড়িষ্যার NIT রাউরকেলা।
- গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ: কৃষি গবেষণা, মেডিকেল গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি।
উন্নত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে:
- তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক: কলকাতা, ঢাকা, ভুবনেশ্বর।
- স্টার্টআপ কালচার: প্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবায় নতুন উদ্যোগ।
No comments